কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জেলা আইনজীবীদের একাংশ ২০ আইনজীবীর বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, এসব আইনজীবী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে আন্দোলন দমন ও হত্যাকারীদের পক্ষে কাজ করছেন।
৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে এই আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে, কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর
রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই দুই আইনজীবী আদালতে প্রবেশের চেষ্টা করলে ক্ষুব্ধ আইনজীবী ও শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করেন। গত বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীরা ২০ আইনজীবীর নাম ও ছবি সংবলিত ব্যানার আদালত ভবনের সামনে টাঙান। একই দিন সন্ধ্যায়, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করে বলেছেন, "বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের পক্ষে থাকা আইনজীবীরা কুমিল্লার আদালতে ঢুকতে পারবে না। কেউ ঢোকার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে।"
অভিযোগ রয়েছে, মোস্তাফিজুর রহমান পিপি থাকা অবস্থায় বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আদালতে প্রবেশ করতে দেননি। বেগম খালেদা জিয়ার মামলার শুনানিতেও বাধা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জেরে ওই মহিলার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০ জন চিহ্নিত আইনজীবীর ছবি ও নামসহ ব্যানার টাঙানো হয়েছে। ব্যানারে লেখা, "বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যাকারীদের দোসরদের কোর্ট থেকে বহিষ্কার করুন।"
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা মহানগর আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন,"আওয়ামী লীগের দোসর এই আইনজীবীরা হত্যাকারীদের রক্ষা করতে ষড়যন্ত্র করছেন। তাই তাদের ছবি ব্যানারে প্রকাশ করা হয়েছে। কুমিল্লায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কোনো ঠাঁই হবে না। যেখানে ফ্যাসিবাদ, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।"
কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা বলেন,"জুলাই-আগস্টের মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেওয়া যাবে না, এমন কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। সংবিধান ও বার কাউন্সিলের বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক আইনজীবীর পেশাগত দায়িত্ব পালন করার অধিকার রয়েছে।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান (লিটন) ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় কুমিল্লার আদালত প্রাঙ্গণে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করতে প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।
১০ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫