জেন-জিদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে করে পালিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। তার সহকারী প্রকাশ সিলওয়াল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তিনি, যা গ্রহণ করা হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে অলি লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রেসিডেন্ট, নেপালের সংবিধানের ৭৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত
হওয়ার পর, দেশের বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংবিধান অনুসারে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান এবং সমাধানের দিকে আরও পদক্ষেপ নেয়ার জন্য, সংবিধানের ৭৭ (১) (ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, আজ (মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর) থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’পদত্যাগের আগে তিনি দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে ফোনালাপ করেন এবং দেশ থেকে নিরাপদে বের হওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা চান। গুঞ্জন উঠেছে তিনি সম্ভবত পালিয়ে দুবাই অথবা ভারতে আশ্রয় নেবেন।
সেনাবাহিনীর সূত্রে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলিকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
অফিশিয়াল সূত্রে জানা গেছে, অলি সেনাপ্রধানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং দেশের ক্রমাবনত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানান। এর জবাবে জেনারেল সিগদেল বলেন, সেনাবাহিনী কেবল তখনই হস্তক্ষেপ করে দেশকে স্থিতিশীল করতে পারবে, যদি প্রধানমন্ত্রী অলি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দেন। সেনা সূত্র আরও জানায়, অলি পদত্যাগ করলেই সেনাবাহিনী দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়া হয়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলেও একপর্যায়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে শুরু হয় সংঘাত।
এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভল্যুশন’ নাম দেন বিক্ষোভকারীরা।
৯ ঘন্টা আগে মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫