Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

শিক্ষা

কুবিতে বিজয় দিবসে রীতি ভঙ্গ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

কুবি প্রতিনিধি:
৩ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
# ফাইল ফটো



কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিপরীতমুখী অবস্থান তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত রীতি ভেঙে প্রশাসন একাই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে কর্মসূচি শেষ করায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।


সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।


বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, যেকোনো জাতীয় দিবসে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনকে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সাধারণত প্রশাসন, হল ও বিভাগগুলোর পরে একে একে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ফুল দেয়। এ ক্ষেত্রে দিবস উদযাপন কমিটি মাইকে একে একে সকলের নাম ঘোষণা করে।


তবে এবছর সেই নিয়ম ভঙ্গ করে শুধুমাত্র প্রশাসন, হল ও বিভাগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়েই কর্মসূচি শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় সংগঠনগুলো। এসময় সংগঠনগুলো বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসে সকল দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে সকল সংগঠনকে সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।


এসময় শিক্ষার্থীরা বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আমজাদ হোসেন সরকারের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি তা আমলে না নিয়ে প্রশাসনের উপর দায় চাপান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত সংগঠনগুলো কেন ফুল দিতে পারবে না, তা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার শিক্ষার্থীদের কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যান। এসময় রেজিস্ট্রারকে অযোগ্য দাবি করে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে বলেন শিক্ষার্থীরা।


বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্তদাতা সংগঠন ‘বন্ধু’র সভাপতি ওসমান গণি বলেন, "শিক্ষার্থীদের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়া প্রশাসনের, বিশ্ববিদ্যালয়ের অরাজনৈতিক ও অন্যতম স্টেকহোল্ডারদের রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ না মনে করা অত্যন্ত দুঃখজনক।"


তবে বিষয়টি নিজেদের ভুল বলে স্বীকার করেছেন বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. আমজাদ হোসেন সরকার। তিনি বলেন, "বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত সংগঠনগুলোকে ফুল দেওয়ার জন্য ঘোষণা না করা আমাদের ভুল ছিল।"


এদিকে, প্রশাসনের সঙ্গে সংগঠনগুলোর বাগ্বিতণ্ডার সময় শহীদ মিনারে ফুল দেয় শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি এবং রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনিক ব্যক্তিদের উপস্থিতিতেই সংগঠনগুলোর ফুল দেওয়ার সময় রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রদলকে ফুল দিতে দেখা যায়। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "যেখানে সংগঠনগুলো ফুল দিতে পারে না, সেখানে ছাত্রদল কীভাবে ফুল দিতে পারে? এটা প্রশাসনের জন্য লজ্জার।"


রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে দলীয় কার্যক্রম নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, "আমরা আহ্বায়ক কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অনুমতি নিয়ে ছাত্রদলের কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। তারা আমাদের বলেছেন, আমরা যেন ক্যাম্পাসে কোনো স্লোগান না দিই। আমরা তাই করেছি।"


শিক্ষার্থীরা আইন অমান্য করে রাজনৈতিক কার্যক্রম সক্রিয় করার জন্য প্রক্টর ড. আবদুল হাকিমকে পদত্যাগ করতে বললে তিনি বলেন, "আজকে চাইলে যে কেউ ফুল দিতে পারবে।" তখন শিক্ষার্থীরা পাল্টা জানতে চায়, ছাত্রলীগ ফুল দিতে পারবে কি না। উত্তরে তিনি বলেন, "হ্যাঁ, তারাও পারবে।"

৩ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন