Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

শিক্ষা

চবি'র উত্তরণের গল্প

আহমেদ হানিফ, চবিঃ
২২ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
# ফাইল ফটো

'মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য' এমন নীতি বাক্য হরহামেশাই শুনতে ফেলেও কাজের ক্ষেত্রে মানুষের জন্য কাজ করা মানুষটির আর খোঁজ পাওয়া যায় না।

নীতি বাক্য উদগীরণ করতে পারলেই আমাদের মানসপটে সেবক সেবক একটা অনুভুতি কাজ করা শুরু করে,এই ভালো লাগার রেশ তখনই শেষ হয়ে যায়,যখন মানুষ সাহায্যের জন্য দ্বারস্থ হয়।

আজ যাদের কথা বলবো তারা নীতিকথা শুনিয়েই থেমে থাকেনি,নিজেদের ছাড়িয়ে গেছে নিজেদের

মাত্রা থেকে।

আমাদের গল্পের চিত্রপট অঙ্কিত হয়েছে সবুজে শ্যামলে ঘেরা মায়াবী শাটলের ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। আজ যে উত্তরণের গল্প বলবো তা মানবিক মানুষদের স্বপ্নবোনা ব্যাতিক্রমধর্মী কাজের নাম'উত্তরণ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-সংকটে সহযোগিতা।

তিন স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে এগিয়ে চলছে উত্তরণ, রবিন, মারুফ, জাহিদের স্বপ্নের পথ চলা শুরু হয় মহামারী করোনা ভাইরাসের পর যখন মানুষ নতুন করে বাঁচতে আশায় বুক বেঁধেছে তখনই।

কিন্তু বিধিবাম করোনা পরবর্তীতে পৃথিবীর অবস্থা স্বাভাবিক হলেও দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থীরা অর্থ সংকটে পতিত হয়ে দু'বেলা ভাতের সংস্থান করতে পারছিলো না।তখনি ভালোবাসার বন্ধনে, সহযোগিতার উদ্দেশ্য

"আমরা রচি ভালোবাসার আশার ভবিষ্যৎ, মোদের স্বর্গ-পথের আভাস দেখায় আকাশ-ছায়াপথ!" এমন স্লোগানে আত্মপ্রকাশ ঘটে উত্তরণের।

বিশদভাবে বলতে গেলে বলা চলে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কমে আসলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো খুলে দেয়া হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। করোনার কালো থাবায় দেশের নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো পড়ে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ আসে এসব পরিবার থেকে।নানা সমস্যার মধ্যে অনেকেই অর্থ সংকটের ধরুন খাবার কিনতেও পারছিলো না,এ বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পরপরই ২০২২ সালের ২১শে জানুয়ারি উত্তরণের সদস্যরা নিজেদের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে একটি প্রকল্প চালু করেন যা বর্তমানে উত্তরণ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  নামে পরিচিত।

ছেলে মেয়েদের হল মিলিয়ে ৪ টি হলে শুধুমাত্র খাতায় নাম লেখিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেছে উত্তরণ,যার ফলে অস্বচ্ছল যে কেউ চাইলেই বিনা বাধায় খাবার খেতে পারছেন।

এই উত্তরণের নতুন আরেকটি প্রকল্প হলো যারা ইফতারের আয়োজন করতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট নামক স্থানে বিনামূল্যে ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তারা নীতিকথা বলে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেনি তারা মানবতার পরিচয় দিয়ে মানবিক কাজের মাধ্যমে নিজেদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাচ্ছেন।

গত ১৩ মাসে ৪টি আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের খাবার বিল বাবদ বিল পরিশোধ করেছেন  ১ লক্ষ ২১ হাজার ৮৮০ টাকা।নিঃসন্দেহে এমন কাজ গুলো সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার।

আমরা সবাই যদি উত্তরণের মতো নিজেদের অবস্থান থেকে ছোট ছোট চেষ্টা করতে থাকি তাহলে বিশ্বাস করতে পারি বাংলাদেশের একজন মানুষও আর না খেয়ে থাকতে হবেনা। তাই আমরা উত্তরণের গল্প নিজেদের জীবনে ধারণ করে মানবিক সত্তার বিকাশ ঘটিয়ে অসহায় মানুষের পাশে থাকি।

২২ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন