মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কুমিল্লা নগরীর ৮ নং ওয়ার্ডের ঠাকুরপাড়ার দুই সমাজসেবক জাফরিন হক অনন্যা ও জাহিদুল হক অনিক।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে তারা তাদের নিজ বাড়ি ঠাকুরপাড়ায় এলাকার অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
এই আয়োজন সম্পূর্ণভাবে তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে, যা স্থানীয়দের
মাঝে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।এই উদ্যোগের আওতায় শতাধিক অসহায়, দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের মাঝে বিভিন্ন প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আটা, তেল,চিনি,লবণ,সাবান ও অন্যান্য স্যানিটারি সামগ্রী।
প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি করে প্যাকেট তৈরি করা হয়, যাতে তাদের কয়েক দিনের প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হয়। এই সহযোগিতা অনেক পরিবারকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে, বিশেষ করে বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যারা বেশ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
জাফরিন হক অনন্যা বলেন, "সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। আমরা চাই, যারা সামর্থ্যবান, তারা যেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসেন। মানুষ মানুষের জন্য—এই বিশ্বাস থেকেই আমাদের এই পথচলা।"
জাহিদুল হক অনিক বলেন,"বর্তমান কঠিন সময়ে দরিদ্র মানুষের জীবন অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। আমরা চেষ্টা করেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস যদি কারো মুখে হাসি ফোটায়, সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সার্থকতা। ভবিষ্যতেও আমরা এ ধরনের মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে চাই।"
খাদ্য বিতরণের আগে আয়োজিত হয় একটি সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভা। এতে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাফসা জাহান,কুমিল্লা মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী ফারহা এমদাদ, সদস্য মোজাহিদুল ইসলাম, শাহিদা আক্তার সুমি, জুলাই আহত তানভীর আহমেদ, নারী উদেক্তা ও সংগঠক মোহসেনা আক্তার সহএলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, তরুণ ও সমাজসেবীরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় তারা এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী, মানবিক এবং অনুকরণীয় বলে মন্তব্য করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোখলেছুর রহমান বলেন,"আমরা গর্বিত, আমাদের ওয়ার্ডে এমন কিছু তরুণ সমাজসেবক আছেন, যারা নিজেদের উদ্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এটা সমাজের জন্য বড় উদাহরণ।"
একজন নারী উপকারভোগী কামরুন নাহার জানান, "আমার পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। এই সহায়তা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আল্লাহ যেন তাদের উত্তম প্রতিদান দেন।"
অনন্যা ও অনিক জানিয়েছেন, তাদের এই মানবিক উদ্যোগ এককালীন নয়। ভবিষ্যতে তারা চিকিৎসা সহায়তা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন। তারা আশাবাদী, সমাজের সচেতন মানুষদের সক্রিয় অংশগ্রহণ পেলে তারা আরও বৃহৎ পরিসরে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবেন।
১৬ দিন আগে সোমবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫