Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

সারাদেশ

পিএইচডি করতে কানাডা যাওয়া হলো না সোহানের

ডেস্ক রিপোর্ট:
২১ দিন আগে রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫
# ফাইল ফটো

রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় সন্দেহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে বেধড়ক পিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে আবদুল্লাহ আল সোহান (২৮) নামে এক যুবকের। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর যে বাসায় ভাড়া থাকেন, সেই ভবনের বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোহানের বাবা ইউনুস খান বলেন, আমার ছেলে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে। আগামী এপ্রিলের ২২ তারিখে

পিএইচডি করার জন্য কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। সে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করত। দেশের বাইরে চলে যাবে সে জন্য কয়েক দিন আগে সে চাকরিটা ছেড়ে দেয়। কিন্তু তার কানাডা যাওয়া হলো না। সম্প্রতি আমি জানতে পারি, দোলা নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে সোহান। কিন্তু বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। মঙ্গলবার রাতে আমার ছেলে ওই মেয়ের বাসায় যায়। পরে সন্দেহ করে আমার ছেলেকে মারধর করে বাড়িওয়ালা জামালসহ কয়েকজন হত্যা করে। আমার ছেলে যদি বিয়ে না করে ওই বাসায় যায়, তা হলে পুলিশকে খরব দিতে পারত। অথবা তাদের উদ্দেশ্য যদি খারাপ থাকে, কিছু টাকাপয়সা নিয়ে আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে আমার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলল, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমার ছেলেকে ওই মেয়ের সামনে এভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল, তার কি কোনো ভূমিকা ছিল না? আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।


নিহত সোহানের চাচাতো ভাই সাগর মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাতে সোহান ও তার স্ত্রী মাসুমা সিদ্দিকা দোলার বাসায় যান। তখন দোলাদের বাসায় তাদের পরিবারের কেউ ছিল না। দোলার বাসার বাড়িওয়ালা ও স্থানীয়রা বিয়ের বিষয়ে জানতেন না। কারণ দুই বছর আগে আদালতের মাধ্যমে দোলাকে বিয়ে করেছিলেন সোহান। এ সময় বাড়িওয়ালা জামাল ওই দম্পতিকে জেরা করতে থাকেন। একপর্যায়ে দোলা তাদের বিয়ের কাগজপত্র বাড়িওয়ালাকে দেখান। কিন্তু তার পরও বাড়িওয়ালা দোলার কাছ থেকে সোহানকে ছিনিয়ে নিয়ে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে মারতে পাশের বাসার নিচে নিয়ে যান। একপর্যায়ে সোহান অচেতন হয়ে পড়লে প্রথমে মনোয়ারা হাসপাতাল ও পরে মুগদা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোহানের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

সাগর মিয়া আরও বলেন, পিএইচডি করতে কানাডা যেতে চেয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল সোহান। এ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। পিঠার ব্যবসা ছিল সোহানের, বিভিন্ন দোকানে পাইকারি বিক্রি করতেন। বর্তমানে খিলগাঁও ‘সি’ ব্লক আনসার ক্যাম্পে পেছনে ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল থানার গোলাবাড়ি গ্রামে। এক ভাই এক বোনের মাঝে সোহান বড়।


যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মফিজুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মানিকনগরের মনোয়ারা হাসপাতালের পেছনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সোহানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মধ্যরাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের বুকের ওপরে লালচে দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা ইউনুস খান। অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা জামালসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, ওই যুবককে মারধর করে হত্যা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ওই যুবক। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।

২১ দিন আগে রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন