Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

রাজনীতি

‘অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা’ ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে, অভিযোগ করেছে বিএনপির: রুহুল কবির রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট:
১৫ ঘন্টা আগে রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫
# ফাইল ফটো

সারাদেশে ‘অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা’ ক্ষমতাসীনরা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগে করেছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দলটি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের অশুভ উদ্দেশে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতিকারীরা। তারা গণপরিবহনে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ

করছে আর নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালাও পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে শটকে পড়েছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শৗদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রতিরোধে কিংবা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে যে, দেশজুড়ে চলমান নাশকতায় ক্ষমতাসীন অপশক্তি জড়িত। প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের আজ্ঞাবাহী পুলিশ সদস্যরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে চালক বা তাদের সহকারীদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, কিভাবে পুলিশ বা ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা তাদের বাসে আগুন দেওয়ার জন্য দায়ী।’

অভিযোগের সপক্ষে বেশ কিছু ঘটনাও তুলে ধরেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের কাছে, বাংলা মোটরের মোড়ে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকের আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘দেশের সর্বত্র পুলিশ বা র‌্যাবের শত শত পেট্রোল টিম এবং বিজেবির শত শত প্লাটুন অস্ত্র সজ্জিত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে বিপুল অস্ত্র সশস্ত্র সহযোগে পুলিশের সুসংহত টহল। বাংলাদেশ যেনো পরিণত হয়েছে এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও বিরোধী দলের সদস্য কোনো প্রকার সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগে কাজে লিপ্ত হবে এই দাবি সর্বত্রই হাস্যকর।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরের আন্দোলন প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘২০১৪ সালে ছাত্রলীগের ৩ জন সদস্যকে বাসে অগ্নিসংযোগের সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ২ জন ছাত্রলীগ সদস্য ককটেল ও পেট্রোলবোমাসহ আটক হয়েছিল, ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় পেট্রোল বোমাসহ গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর বাধ্য হয়ে পুলিশ ২ জন যুবলীগ কর্মীকে ছেড়ে দিয়েছিল। ২০১৪ সালে বিরোধী দলের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ তার নিজস্ব বিহঙ্গ পরিবহনে পেট্রোল দিয়ে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যম মারফত জানা যায়। সেখানে আগুনে ১১ জনের মৃত্যুও হয়েছিল।’

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘২০০৬ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগ ট্রেনে এবং বাসে আগুন দিয়ে, পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলা করে মানুষ হত্যা করেছিল। শেরাটন হোটেলের সামনে গান পাউডার মেরে বাসে আগুন দেওয়াসহ এমন অজস্র দৃষ্টান্ত আছে। মানুষ হত্যা করে, জনগণের সহায়-সম্বল ধ্বংস করে, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সেই দায় বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে, মিথ্যা মামলায় ভিন্ন দল ও মতের ওপর দমন-নিপীড়ন চালাবার যে বীভৎস রাজনীতি আওয়ামী লীগ লালন করে আমরা তাকে ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাই।’

তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশ ৪শ ৭৫ জনের অধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং বিভিন্ন মামলায় ১ হাজার ৭২০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

১৫ ঘন্টা আগে রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন