Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২

জাতীয়

সৌদি থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীরা ১০ শতাংশ খরচ দেন, এটি কমানো সম্ভব: গভর্নর

ডেস্ক রিপোর্ট:
৯ দিন আগে মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫
# ফাইল ফটো




সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রক্রিয়া জটিল এবং খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। দুই দেশ যৌথভাবে কাজ করলে অর্থ স্থানান্তরের খরচ কমানো সম্ভব, যা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বড় উপকার হবে বলেন জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।


তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে ৬ থেকে ১০ শতাংশ খরচ দেন, যা তাদের জন্য বিশাল চাপের কারণ। প্রবাসী

আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে আরও দক্ষ এবং কম খরচে অর্থ স্থানান্তরের ব্যবস্থা প্রয়োজন। এজন্য দুই দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’


মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই) আয়োজিত সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।


গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃদেশীয় বিনিয়োগ ও অর্থ লেনদেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে লেনদেন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস সৌদি আরব। এটি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহেরও প্রধান উৎস।’


বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছেছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘আমরা এখন ট্রিলিয়ন ডলারের পথে অগ্রসর। ফলে এই অঞ্চলে, বিশেষ করে বাংলাদেশে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অসংখ্য সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত সহনশীল রাষ্ট্র। প্রাকৃতিক, রাজনৈতিক বা বৈশ্বিক নানা ধাক্কা সত্ত্বেও আমাদের প্রবৃদ্ধি কখনোই নেতিবাচক হয়নি। গত ৩০ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি কখনো সাড়ে তিন শতাংশের নিচে নামেনি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, কোভিড বা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আমাদের অর্থনৈতিক গতিকে থামাতে পারেনি।’


তিনি সৌদি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করুন। সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দীর্ঘ এবং দৃঢ়। তবে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও গভীরতা আনা প্রয়োজন। বাণিজ্য, অর্থনীতি, আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা ও শ্রমবাজার উন্নয়নে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’


গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা চাই সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের জীবন আরও উন্নত হোক, তাদের আয় বৃদ্ধি পাক। সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) ভারতে বেশ কয়েকটি বিনিয়োগ করেছে, তবে বাংলাদেশে এখনও তেমন কিছু করেনি। সৌদি পিআইএফ ও বেসরকারি খাত বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। তারা আমাদের উদ্যোক্তা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।’


অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনিই প্রথম সরকারি পর্যায়ে প্রবাসী শ্রমিক পাঠানোর চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেন। বর্তমানে সৌদি আরব থেকে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসছে তা প্রশংসনীয়। দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করলে রেমিট্যান্স বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।’


তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বড় তহবিলের প্রয়োজন। দেশ লক্ষ্য করছে পুঁজিবাজারকে ‘ফ্রন্টিয়ার ইকোনমি’ থেকে ‘ইমার্জিং মার্কেট’-এ উন্নীত করতে। এ ক্ষেত্রে সৌদি তহবিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শুধু জ্বালানি বা বস্ত্র খাতেই নয়, আরও বহু খাতে দুই দেশ একসাথে কাজ করতে পারে।’


এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সৌদি আরব আমাদের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত বন্ধু। তবে গত ৫৩ বছরে দুই দেশের মধ্যে কোনও যৌথ ব্যবসায়ী চেম্বার গড়ে ওঠেনি। অবশেষে আমরা এটি করতে পেরেছি। বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, তৈরি পোশাক, কৃষি পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও দক্ষ নার্স রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব। বিপরীতে বাংলাদেশে অবকাঠামো, সরবরাহ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা সম্ভব।’

৯ দিন আগে মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন