রাশিয়া ২০২১ সাল থেকে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবানকে তাদের নিষিদ্ধ 'সন্ত্রাসী সংগঠন'-এর তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ওলেগ নেফেদভ এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার আদেশ দেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া প্রায় ২০ বছর ধরে তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এখন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সেই নিষেধাজ্ঞা
তুলে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।১৯৯০-এর দশকের আফগান গৃহযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া তালেবানকে সমর্থন করছে। ওই সময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের পর তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে।
সম্প্রতি ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত স্বার্থ রাশিয়া ও তালেবানকে কাছাকাছি এনেছে। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের একটি "মিত্রশক্তি" হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
এছাড়া, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ফোরামে রাশিয়া তালেবান নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, রাশিয়া মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় গ্যাস রপ্তানির জন্য আফগানিস্তানকে একটি ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ গত অক্টোবরে বলেছিলেন, "আফগানিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে রাশিয়া কাজ করে যাবে।"
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু রাশিয়াই নয়, আরও কয়েকটি এশীয় দেশও তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
তালেবান নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ এবং নারীদের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় কাজাখস্তান ও কিরগিজস্তান এক সময় তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে উভয় দেশই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর চীন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ইরান কাবুলে তাদের দূতাবাস খুলেছে। এর মধ্যে চীন ২০২৩ সালে তালেবান শাসনের অধীনে প্রথম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে।
এই উন্নয়ন আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তালেবানের মানবাধিকার রেকর্ড এখনও অনেক দেশের কাছেই উদ্বেগের কারণ।
১ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫