চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমে জানান, বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে তার চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা
করেছে।নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন। সাইফুল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সংঘর্ষে আরও আটজন আহত হয়েছেন, যাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক রয়েছেন। গুরুতর আহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। অন্যদিকে, জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুর করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, কিন্তু চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেয় এবং বিক্ষোভ শুরু করে।
পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী চেষ্টা করেও প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে কারাগারে নিতে পারেনি। কিছু সময় পর, বেলা পৌনে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের (টিয়ার) শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এর পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এরপর চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে নেওয়ার সময় পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ জানান, সাত-আটজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, একজন মারা গেছে, তবে কিভাবে মারা গেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আইনজীবী নিহতের ঘটনায় আদালত এলাকায় হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা। আগামীকাল বুধবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তারা।
২৪ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫