শোকার্ত হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র আরফানুল হক রিফাতের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত জানাজায় লাখো মানুষ শরিক হন। জুমার নামাজের পর থেকে ঈদগাহ ময়দানমুখী মানুষের ঢল নামে। নানা শ্রেণি, পেশা ও বয়সের মানুষ ঈদগাহ
জানাজায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা-১১ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু, কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজিব মোহাম্মদ ফখরুল, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএফএম আব্দুল মঈন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জামাল নাছের, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
জানাজা শেষে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ এলাকায় আরফানুল হক রিফাতকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাবা-মায়ের কবরের পাশেই তাকে সমাহিত করা হবে।
এরআগে দুপুর ১টা পর্যন্ত দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কার্যালয় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে মেয়র রিফাতের মরদেহ রাখা হয়। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরাসহ সর্বস্তরের মানুষ মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আরফানুল হক রিফাত।
মেয়রের পরিবারিক সূত্রমতে, দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন মেয়র রিফাত। গত ৬ ডিসেম্বর অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়ায় তাকে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরে রোববার (১০ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১৮ মিনিটে তিনি মারা যান।
২০২২ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দুইবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন আরফানুল হক। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
রিফাত কুমিল্লা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত মেয়র রিফাত একজন স্বনামধন্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে সারাদেশে সুপরিচিত।
১৯৮০ সালে তিনি কুমিল্লা শহর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৮১ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের প্যানেলে তিনি বহিঃক্রীড়া ও ব্যায়ামাগার সম্পাদক নির্বাচিত হন
১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য নির্বাচিত হন রিফাত। পরে কুমিল্লা জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের টানা দুইবারের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
৬ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫