বাধ্যতামূলক অবসর আতঙ্ক বিরাজ করছেেএখন প্রশাসনে। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসরের পর দুই দফায় পুলিশের ৫ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে এক ধরনের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, সরকার এখন প্রশাসনের ভেতর শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে এবং সামনের দিনগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং আরও বহু কর্মকর্তা
এবং কর্মচারী বাধ্যতামূলক অবসরে যাবেন।সরকারি সূত্রগুলো বলছে যে, পুলিশ প্রশাসনের বাধ্যতামূলক অবসরে বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে গেছে। পুলিশ প্রশাসনের যে সমস্ত ব্যক্তিরা বিএনপি-জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত, যারা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন এরকম ১২ এবং ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং তাদেরকে ধরে ধরে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে। তবে সরকারের একটি সূত্র বলছে, ঢালাওভাবে শুধু মাত্র ২৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হলেই তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়া হবে এমন ধারণাটা সঠিক নয়। বরং সরকার একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করে বাধ্যতামূলক অবসরে সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করছে। এই নীতিমালার মধ্যে রয়েছে-
১. যাদের যে সমস্ত কর্মচারীদের পঁচিশ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের অতীত কার্যক্রম।
২. তাদের রাজনৈতিক অনুষঙ্গ অর্থাৎ তারা বিএনপি-জামায়াত বা অন্য কোনো সরকার বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কিনা সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া।
৩. সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা: অনেক পুলিশ প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরকম সুস্পষ্ট অভিযোগ উঠেছে যে, তারা সরকারের অনেক গোপন তথ্য এবং স্পর্শকাতরতার সিদ্ধান্তগুলো লন্ডনে কিংবা বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের অডিও কল রেকর্ড বিদেশে সাইবার সন্ত্রাসীদের কাছে চলে গেছে। এই তিন ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেছে যে, পুলিশের ভেতর থেকে কিছু লোক এসব প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আর এ কারণেই পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা গোপনে গোপনে বিএনপির সঙ্গে আঁতাত করছে বা যোগাযোগ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ প্রশাসনের সামনে আরও ১০ থেকে ১২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরকম বাধ্যতামূলক অবসরের খড়গ আসতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। শুধু পুলিশ প্রশাসন না, প্রশাসনের ভেতরেও বাধ্যতামূলক অবসরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে ১২ জন কর্মকর্তার তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে, যাদেরকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হবে। এই সমস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে যুগ্ন সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে সরকারি সূত্রগুলো বলছে পুলিশ প্রশাসনের ব্যাপারে যেমন সরকার শূন্য সহিষ্ণু গ্রহণ করবে এবং যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের স্যাবোটাজে লিপ্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেই অ্যাকশন নেওয়া হবে। প্রশাসনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অত দ্রুত হবে না। বরং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা এবং যাচাই-বাছাই করা হবে। তবে এখন যারা সর্বোচ্চ পদে অর্থাৎ সচিব পদে আছে তাদের মধ্যে যাদেরকে নিয়ে প্রশ্ন আছে, যাদেরকে নিয়ে বিতর্ক আছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং শেষ সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বেই কার্যকর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
সূত্র: বা.ইন।
২০ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫