গাজীপুরের শ্রীপুরে অন্তঃসত্ত্বার পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন ফরাজির বিরুদ্ধে। লাথির আঘাতে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিকে আঘাতের কারণে অনাগত সন্তান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বজনেরা।
অপর দিকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন ফরাজি বলেন, সামান্য শাসন
গত ২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের নালিয়াটেকী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা নাসরিন আক্তার উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের নালিয়াটেকী গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আল আমিন বলেন, ‘ঘটনার দিক সকাল আটটার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন ফরাজি আমার কেনা জমির ওপর দিয়ে জোর করে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমার শ্যালক কাওসারের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শ্যালককে মারধর করেন তিনি। এ সময় আমার স্ত্রী নাসরিন ভাইকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। এ সময় কামাল উদ্দিন আমার স্ত্রীর পেটে জোরে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’
আল আমিন আরও বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমার স্ত্রীর রক্তক্ষরণ হচ্ছে, পানি যাচ্ছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন অবস্থার উন্নতি না হলে বাচ্চা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। একদিকে স্ত্রীকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি, অপর দিকে কামাল উদ্দিন ও তাঁর লোকজন থানা থেকে অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। এর আগেও তিনি আমার জমির ওপর দিয়ে হেঁটে চলাচলের রাস্তা নিয়েছেন।’
ভুক্তভোগী নারী নাসরিন আক্তারের ভাই কাওসার বলেন, ‘কামাল উদ্দিন ফরাজি ও তাঁর লোকজন জোর করে রাস্তা নিতে চাইলে আমি নিষেধ করি। এ সময় কামাল উদ্দিন সঙ্গে তর্কে জড়ালে একপর্যায়ে আমার শার্টের কলাট ধরে মারধর করেন। এ সময় আমার বোন এগিয়ে এলে তিনি তাঁকে সজোরে লাথি মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার বোন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।’
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন ফরাজি বলেন, ‘আমি তাঁকে (ভুক্তভোগী নারী) লাথি মারিনি। সামান্য শাসন করা হয়েছে। এই ছোট্ট বিষয়টিকে বড় করে আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করছে একটি পক্ষ।’
রাজাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হারিজ সিকদার বলেন, ‘রাস্তা নির্মাণের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ সময় বাধা দিলে আমি সরে আসি। এরপর আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন উপস্থিত হলে মারধর শুরু হলে আমি চলে আসি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ফরিদ বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তাঁকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
সূত্র-আজকের পত্রিকা
১৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫