এবার উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ঈদুল ফিতরের জামাত জনসমুদ্রে রূপ নেয়। আর স্মরণকালের এ সর্ববৃহৎ জামাত উপভোগ ও অংশ নেওয়াদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অর্ধ শতাধিক চীনা সাংবাদিক ও পর্যটক দল।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশ নেন। বৃহত্তম এ জামাত থেকে জাতীয় অগ্রগতি-সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর
জানা গেছে, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মুফতি মাওলানা সোয়েব বিন আবদুর রবের ইমামতিতে অনুষ্ঠিত এ ঈদের জামাতে পাঁচ লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন। ঈদুল ফিতরের এ জামাতটির পরিধি ঈদগাহ ময়দান ছাপিয়ে আশপাশের রাস্তাঘাট, বাড়িঘরের ছাদ ও নরসুন্দা নদীর বিস্তীর্ণ তীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অসুস্থতাজনিত কারণে মূল ইমাম ইসলাহুল মোমেনিন বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ এবারো আসতে পারেননি।
এদিকে এমন সর্বপ্রাচীন ঈদগাহ ময়দানের জামাত উপভোগ করতে আসা চীনা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা অনেকটা থথতমত খেয়ে পরিচয় গোপন করে নিজেদেরকে পর্যটক দল হিসাবে দাবি করেন। কিন্তু; তাদের প্রত্যেক নারী-পুরুষের হাতে উন্নতমানের ক্যামেরাসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যবহৃত যাবতীয় ইনস্ট্রুমেন্টস ছিল।
এ ছাড়াও এবারকার মুসল্লিদের একটি বড় অংশ ছিল পাবনা, কুষ্টিয়া, জামালপুর ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চলের। তবে পর্যটকের মুখোশে অর্ধ শতাধিক চীনা সাংবাদিকদের মুভমেন্ট সবার দৃষ্টি কাড়ে।
ঐতিহাসিকদের মতে, ইসলামের ঐশী বাণী প্রচারের জন্য সুদূর ইয়ামেন থেকে এ দেশে আসা শোলাকিয়া জমিদার বাড়ির পূর্ব পুরুষ সৈয়দ আহমেদ এর হাতে এ ঈদগাহ ময়দানের গোড়াপত্তন হয়। ১৮২৮ সালে তার ইমামতিতে কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে নরসুন্দা নদীর পারে প্রথম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আর কাতার গণনায় তখন ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ মুসল্লির উপস্থিতি পাওয়া যায়। সেই থেকে এ ঈদগাহ ময়দানটি সোয়া লাখিয়া হিসাবে পরিচিতি পায়। দিনে দিনে উচ্চারণ বিবর্তনের ফলে উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন এ ঈদগাহ ময়দানটি এখন শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান হিসাবে সমধিক পরিচিতি লাভ করেছে।
কুষ্টিয়া,পাবনা, রাজশাহী, রংপুর, জামালপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সিলেটসহ দেশের প্রত্যন্ত ও সীমান্ত এলাকা থেকে আগত মুসল্লিদের সঙ্গে কথা হয়। তারা বিশ্বাস করেন, এই ঈদগাহ ময়দানটির গোড়াপত্তন করেন একজন ইসলাম ধর্মপ্রচারক। এ কারণেই তার ইমামতিতে ১৮২৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ঈদুল ফিতরের জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন। তাদের অনেকেরই বিশ্বাস সে কারণেই এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদুল ফিতরের জামাতে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন। আর এ ঈদগাহ ময়দানে পরপর তিনবার ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করতে পারলে এক হজের সমান সওয়াব হয়।
৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫