জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, জুলাই চার্টারের আলোকে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা রাজনৈতিক দল তা বাস্তবায়ন করবে।
শনিবার
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রেস সচিব এসব তথ্য জানান। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংলাপটি বেলা তিনটায় শুরু হবে।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে, সেখানে সব দলের সম্মতি আশা করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তই হবে জুলাই চার্টার।
প্রেস সচিব আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ছাড়াই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তবে যেসব ক্ষেত্রে ঐকমত্য প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করবে।
শফিকুল আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আজকের এই রাজনৈতিক সংলাপের সূচনা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর এই সংলাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এদিকে, বৈঠকে অংশ নিতে দুপুর দুইটার পর থেকেই ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আসতে শুরু করেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ, মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হাইদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামি আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতারা।
বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বক্তব্য রাখবেন। গত বুধবার সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে। কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ।
কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এই বৈঠকে কমিশন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো বিবেচনা করবে। এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলোর সাথে আলোচনা চলবে।
৩ দিন আগে রবিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৫