চট্টগ্রামের পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে প্রস্তাবিত নতুন টার্মিনাল প্রকল্পে ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বন্দর অপারেটর এপিএম টার্মিনালস।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) সকালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এ তথ্য জানায়।
তিনি জানান, 'আমরা এপিএম-এর হেডকোয়ার্টারে গিয়েছিলাম,
তারা বিশ্বের অন্যতম বড় বন্দর অপারেটর। তারা এই প্রস্তাবিত পোর্টটিকে স্টেট-অফ-দ্য-আর্ট এবং পরিবেশবান্ধব গ্রিন পোর্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। এতে আনুমানিক ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। পুরো বিনিয়োগটাই এফডিআই হিসেবে আসবে—সরকার এক টাকাও দেবে না।'আশিক চৌধুরী জানায়, বাংলাদেশের প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ বা ইকুইটি এফডিআই-এর পরিমাণ এখনও কম, যা সাধারণত বছরে ৪০০ থেকে ৭০০ মিলিয়নের মধ্যে থাকে। একটি প্রকল্পেই যদি ৮০০ মিলিয়ন ডলার আসে, সেটি দেশের অর্থনীতি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বিডা চেয়ারম্যান জানান, 'বাংলাদেশকে গ্লোবাল ফ্যাক্টরি বানানোর স্বপ্ন আমাদের। সেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে পোর্ট ক্যাপাসিটি। আমাদের দেশের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর বয়স ২৫ বছরের নিচে, এ তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকে প্রসারিত করতে হবে। আর তার জন্য দরকার উন্নত ও কার্যকর বন্দর অবকাঠামো।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের পোর্ট ক্যাপাসিটি এখনো সীমিত। শুনতে ভালো লাগে ছয়গুণ বাড়ছে—কিন্তু তাতেও আমরা ভিয়েতনামের সমকক্ষ হতে পারব না, যেখানে মোট ৫৪টি পোর্ট রয়েছে। আমাদের হাতে কয়েকটি পোর্ট আছে—মোংলা, চট্টগ্রাম, মাতারবাড়ী মিলিয়ে মাত্র পাঁচ-ছয়টি। তাই সীমিত সক্ষমতাকে সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দরকার।'
এপিএম-এর মতো অভিজ্ঞ কোম্পানিকে এনে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় বন্দরের অপারেশন পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, 'বিশ্বজুড়ে যেসব শীর্ষ পোর্ট অপারেটর আছেন, তারা তাদের নিজ দেশে এক-দুইটা পোর্ট চালালেও বিদেশে ৬০-৭০টি পোর্ট পরিচালনা করেন। ভারত, পাকিস্তানেও ডিপি ওয়ার্ল্ডের মতো কোম্পানিগুলো একাধিক পোর্ট চালায়। সেখানে আমাদের দেশে নিরাপত্তা নিয়ে অযথা সন্দেহ করা হয়।'
নৌঘাঁটির নিরাপত্তা প্রসঙ্গে আশিক চৌধুরী বলেন, 'বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুবই দক্ষভাবে সীমিত রিসোর্স নিয়েও আমাদের সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমি সম্পূর্ণ আস্থা রাখি, জাতীয় স্বার্থ ও বাণিজ্যিক স্বার্থ তারা ভালোভাবেই রক্ষা করতে পারবে।'
পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
৫ ঘন্টা আগে বৃহস্পতিবার, মে ৮, ২০২৫