বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ ফয়জুর রহমান কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করছেন নিয়মিত।
জানা যায়, ডাঃ ফয়জুর রহমান (বিএমডিসি রেজিঃ নং- ৪৮৫৪৩) চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ৩৩-তম বিসিএস (স্বাস্থ্য)
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে কর্মস্থলে অনিয়মিত উপস্থিতি এবং সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার কারণে হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক তাকে একাধিকবার শোকজ প্রদান করেছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ ওয়াহীদুজ্জামানকে একাধিকবার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে ডাঃ ওয়াহীদুজ্জামান মানসিকভাবেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালেই দায়িত্বরত অবস্থায় মারা যান। তত্ত্বাবধায়কের মৃত্যুর মাত্র ২দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি ডাঃ ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে হাসপাতালের পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মৃত্যুতে খুশি হয়ে তারা উক্ত পিকনিকের আয়োজন করেছিল বলে গুঞ্জন ছিল।
ডাঃ ফয়জুর রহমানের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করা হয়। এ প্রেক্ষিতে তাকে বরগুনা জেলায় বদলি করা হয়। তিনি ২৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। যোগদান পরবর্তী তিনি ২/১ দিন কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে তার মালিকানাধীন আশুগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতে দেখা যায়। এছাড়া তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে বেশ কয়েকটি ক্লিনিকেও নিয়মিত প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমেলজনিত কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মস্থলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হলেও তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা এ বিষয়ে একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তারপর উপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার তাকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি তিনি শোকজ এর কোন জবাব দেননি। ফলে তার বেতন ভাতা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে দাপ্তরিক সূত্রে জানা যায়।
একদিকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশুগঞ্জ উপজেলায় তার মালিকানাধীন ও অন্যান্য ক্লিনিকে নিয়মিত প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন।
তিনি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সদস্য (এলএম- ০৭০০০৯১) ও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত বলে জানা গেছে। ফলে তিনি কর্মক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারে সবসময় সক্রিয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হলেও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করে। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে স্বাস্থ্যখাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। একই সাথে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ডাঃ ফয়জুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও মুঠোফোন সংযোগে তাকে পাওয়া যায়নি।
১৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫