মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত শীর্ষ অপরাধীদের বিচার করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সবার বিচার আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ করা হবে।
শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য, সংস্কার
ও নির্বাচন’ বিষয়ক দুই দিনব্যাপী সংলাপের দ্বিতীয় দিনে ‘গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রথম অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এই সংলাপের আয়োজন করেছে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ নামক একটি সংগঠন।এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, এই ট্রাইব্যুনালের ১০ জন প্রসিকিউটর এবং ১৭ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা আছেন। তাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গুম, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, বিশেষত যারা উচ্চপর্যায়ে বসে এসব অপরাধ সংগঠিত করেছিলেন, তাদের বিচার করা। তিনি আরও বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল হাজার হাজার অপরাধী বিচার করতে পারবে না এবং সে লক্ষ্যেও তারা কাজ করছেন না।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এতে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ছিল। এর সাথে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকাংশ কর্মকর্তাও জড়িত ছিল। দেশব্যাপী সবকিছু বিচার করতে গেলে এই ট্রাইব্যুনালের পক্ষে তা সম্ভব নয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাধারণত শীর্ষ পর্যায়ের কমান্ডারদের বিচার করা হয়। জুলাই-আগস্টের গণহত্যার প্রধান কেন্দ্র ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার নিচের স্তরের কয়েকজনকে বিচার প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে প্রধান অভিযুক্তদের মামলা ও বিচার শেষ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে এবং সাধারণ আদালতে বিচার চলমান আছে, সেগুলো চলবে। সেই বিচার করতে কত সময় লাগবে, সেটা সংশ্লিষ্ট আদালতই বলতে পারবেন।
দুই দিন আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাদের অনেক প্রাধান্য রয়েছে, তবে সবচেয়ে বড় প্রাধান্য হচ্ছে যারা দেশটাকে খুন ও গুমের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিলেন, যারা ছাত্র-জনতার রক্তে বাংলার মাটি রঞ্জিত করেছিলেন, তাদের বিচার এক নম্বর প্রাধান্য। এই জায়গায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
২২ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫