উত্তর আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ২০ জনে। দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই খবর নিশ্চিত করেছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে আহত লোকের সংখ্যা ছিল ১৫০ জন এবং নিহতের সংখ্যা ৭ জন বলা হয়েছিল।
সোমবার ভোরে স্থানীয় সময় আফগানিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম শহর মাজার-ই-শরিফের কাছে ভূমিকম্পটি
আঘাত হানে। রাত ১টার দিকে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মাত্রা ছিল ৬.৩ এবং এর গভীরতা ছিল ২৮ কিলোমিটার (মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে ১৭ মাইল)। এটিকে কমলা সতর্কতা স্তরে চিহ্নিত করা হয়েছে, অর্থাৎ উল্লেখযোগ্য হতাহতের সম্ভাবনা রয়েছে।তালেবান সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান আমার বলেছেন, ২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৩২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এর আগে বিবিসিকে বলেছিলেন, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বালখ প্রদেশের তালেবান মুখপাত্র হাজি জায়েদ এক্স-এ আগে লিখেছিলেন, মাজার-ই-শরীফের দক্ষিণে অবস্থিত শোলগারা জেলায় অনেক লোক আহত হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, তারা প্রদেশের সকল জেলা থেকে সামান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন পেয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘বেশিরভাগ আহতের ঘটনা ঘটেছে উঁচু ভবন থেকে পড়ে যাওয়ার কারণে।’
মাজার-ই-শরীফে লাখের বেশি লোক বাস করে। ভূমিকম্পের সময় শহরের অনেক বাসিন্দা রাস্তায় ছুটে আসেন। বালখের তালেবান মুখপাত্র এক্স-এ একটি ভিডিওও পোস্ট করেছেন। যেখানে স্থানীয় ল্যান্ডমার্ক নীল মসজিদের মাটিতে মাজার-ই-শরীফে কিছু ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
ধর্মীয় এই কমপ্লেক্সে প্রথম শিয়া ইমামের সমাধি রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি এখন এমন একটি স্থান যেখানে তীর্থযাত্রীরা প্রার্থনা এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য একত্রিত হন। কাবুল পুলিশের তালেবান মুখপাত্র খালিদ জাদরান এক্স-এ লিখেছেন, ‘পুলিশ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। মাজার-ই-শরিফের কাছে একটি পাহাড়ি প্রদেশ সামাঙ্গানেও অসংখ্য হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
আগস্টের শেষের দিকে আফগানিস্তানের পাহাড়ি পূর্ব অঞ্চলে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সোমবারের এই ভূমিকম্পটি হয়। যেখানে ১ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়। এই ভূমিকম্পটি মারাত্মক ছিল। এই অঞ্চলের গ্রামীণ বাড়িগুলো সাধারণত কাদা এবং কাঠ দিয়ে তৈরি।
ভূমিকম্পের সময় তাদের বাড়িঘর ধসে পড়লে বাসিন্দারা আটকা পড়েন। ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলো যেখানে মিলিত হয়, সেখানে বেশ কয়েকটি ফল্ট লাইনের ওপরে অবস্থিত হওয়ায় আফগানিস্তান ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল।
সূত্র : বিবিসি
১০ দিন আগে রবিবার, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫
