বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে শহীদ আসাদের ৫৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, “আমি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছি, অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিরপেক্ষ
না থাকে, নির্বাচনের সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার। আমি এই কথাটা বলেছি, কারণ আমরা দেখছি কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। তাই আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার সংকট থেকে মুক্তির জন্য দায়িত্ব পালন করবে।”তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রায় ১৫ বছর নির্বাচন থেকে বঞ্চিত। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন। যদি এই বিষয়টি বিতর্কিত করা হয়, তাহলে জনগণ আবার তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা দেখেছি, যদি নির্বাচন দ্রুত না হয়, সময়ক্ষেপণ হলে অন্যান্য শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, ফলে জনগণের চাহিদা পূরণ হতে পারে না।”
ফখরুল বলেন, “আমরা বারবার বলতে চাই, এখন যে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে, তার কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না যে সেই প্রত্যাশাগুলো পূর্ণ হবে।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে, কিন্তু সবাই একমত যে একটি নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন শুধু একটি দলকে ক্ষমতায় পাঠানোর জন্য নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার পথ সৃষ্টি করবে।”
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, “আজ সকল সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন হওয়ার কথা উঠেছে। তাহলে কি আমরা ৪/৫ বছর ধরে অপেক্ষা করবো? যতদিন না সম্পূর্ণ সংস্কার হবে, জনগণ তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবে?”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনো দেখতে পাচ্ছি যে আমলাতন্ত্রের সেই একই অবস্থান, কোনো রদবদল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে, স্কুল-কলেজগুলোতেও যথাযথ শিক্ষা কার্যক্রম চলছে না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এসব সমস্যা অতীত থেকে এসেছে এবং খুব দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব নয়।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “এ কারণে আমরা বলছি, নির্বাচন দ্রুত হওয়া উচিত। নির্বাচনে নতুন যে সরকার আসবে, তারা রাজনৈতিক কমিটমেন্টগুলো পালন করার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।”
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এবং শহীদ আসাদের ভাই আজিজুল্লাহ এম. নুরুজ্জামান নূর।
২৬ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫