Daily Bangladesh Mirror

ঢাকা, শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আইন ও আদালত

কুমিল্লায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে স্বামীকে হত্যা, ৩ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ

ইসতিয়াক আহমেদ :
৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
# ফাইল ফটো

কুমিল্লায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে পরিবহন নেতা রেজাউল করিম রাজা মিয়াকে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। এই সময় তিনজনকে ১০ হাজার করে অর্থদণ্ড প্রদান করে। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত-৫ এর বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের শান্তি রঞ্জন

শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল (২৫), একই উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের আউয়াল কমিশনারের বাড়ীর মৃত রেজাউল করিম রাজা মিয়া স্ত্রী মোসাঃ আলো আক্তার (৩০) এবং চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া জয়নাল মেম্বার বাড়ীর আঃ সামাদ প্রকাশ্যে সামাদ সরকার এর ছেলে মোঃ রাসেদ (২৮)।

মামলার এজাহারে জানা যায় মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার পুরাতন চরচাষি ছায়েদ আলী মুন্সী বাড়ীর মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে মৃত মোঃ রেজাউল করিম রাজা মিয়া তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তাহার শ্বশুর সাবেক কাউন্সিলর আঃ আউয়াল মিয়ার বাড়ির পাশে জমি ক্রয় করে বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করতেন।

এই সময় দাউদকান্দি বাসষ্ট্যান্ডে গজারিয়া পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে নিযুক্ত ছিলেন।

রাজা মিয়ার চাচা আঃ রউফ দাউদকান্দি উপজেলাধীন দোনারচর গ্রামে বসবাসরত অবস্থায় ২০১৪ সালের ১২ জুন রাত সাড়ে ১০টায় আঃ রউফ মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মৃত রাজা মিয়াকে জানাতে মোবাইলে ফোন করে না পেয়ে তার বড় ভাই খাজা মিয়া ঐ রাতে দোনারচর চলে যান। এর পরদিন ১৩ জুন খাজা মিয়ার ছেলে সোহাগ ফোন করে জানায় আঃ আউয়ালের বাড়ির পাশে উঠানে রাজা মিয়াকে মেরে ফেলে রেখেছে । খবর পেয়ে খাজা মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে রাজা মিয়ার লাশ দেখতে পান।

২০১৪ সালের ১৪ জুন ভিকটিমের বড় ভাই খাজা মিয়া বাদী পরকীয়া প্রেমের জের ধরে রাজা মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা আসামি করে দাউদকান্দি থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। পরে পুলিশ সন্ধেহজনভাবে মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অপর দুই আসামী তাপস চন্দ্র শীল ও রাসেদ এর নাম বললে পুলিশ অপর দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।

আসামি গণ আদালতে ১৬৪ ধারার বিধানমতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করলে  দাউদকান্দি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রঞ্জন কুমার ঘোষ মামলার ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে আসামীগণের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করলে  আদালত ২০১৫ সালের ২৭ মে  আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে।

রাষ্ট্রপক্ষ ২১জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে পলাতক আসামী তাপস চন্দ্র শীল, পলাতক আসামি মোসাঃ আলো আক্তার এবং আসামি মোঃ রাসেদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত। রায় ঘোষনাকালে আসামি রাসেদ ডকে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর আসামি মোসাঃ আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি এড. মোঃ নজরুল ইসলাম এবং আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. নোমান ও এড. মাসুদ সালাউদ্দিন।

এদিকে, রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এপিপি নজরুল বলেন- এরফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মামলার এজাহারকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ শীঘ্রই রায় কার্যকর করার জন্য জোর দাবী জানান।

অপরদিকে, আসামী পক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী বিজ্ঞ এডভোকেট মোঃ মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন- এ রায়ে আসামী পক্ষ ক্ষুদ্ধ। রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।

৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন