চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে দুবাইয়ের মিরাকেল গর্ডেনের আদলে গড়ে উঠা “ডিসি ফ্লাওয়ার পার্ক” এ গতকাল শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের প্রথম এবং সবচেয়ে বড় ফ্লাওয়ার ফেস্টিভেল বা ফুল উৎসব। ৯ দিনব্যাপী এই ফুল উৎসব চলবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়কে সে বিশাল জায়গা দখলমুক্ত করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে ফুলের রাজ্য।
কিছুদিন আগেও সেখানে ছিল অবৈধ হোটেল রেস্তোরা ও মাদকের আখড়া।সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছিল শুকতারা নামের এ হোটেল । সে স্থান দখলমুক্ত হয়েছে। সেখানে এখন শোভা পাচ্ছে নানা জাতের ফুলের সৌন্দর্য ও পাখিদের কলকাকলি, দৃষ্টিনন্দন এক ফ্লাওয়ার পার্ক।জানা গেছে, ১৯৪ একর খাস জমির ওপর গড়ে উঠা জায়গায় ইতোমধ্যে রোপণ করা হয়েছে ১২২ প্রজাতির ৫ হাজারের বেশি দেশি বিদেশী জাতের ফুলগাছ। কয়েক মাস আগেও যেখানে ছিল নানা ধরনের অবৈধ স্থাপনা এখন বাতাসে ফুলের ঘ্রাণ, পাখিদের কলকাকলি। হাওয়ায় হাওয়ায় দোলা খাচ্ছে নানান রঙের ফুল। সাগর তীরের পাশে হরেক রকমের ফুলের শোভা দেখে নজর কাড়ে সবার। এই ফ্লাওয়ার পার্কে বিকেলে এখন ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। ফুলে ফুলে সেজে উঠছে পুরো এলাকা। রঙ-বেরঙের নানা জাতের দেশীয় গাঁদা-জবা-ডালিয়া ফুলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি জাতের ফুলও। এ যেন ছোটখাটো ফুলের রাজ্য। অপার সৌন্দর্যের ভিড়ে মূল আকর্ষণ টিউলিপ ফুল। এ ছাড়াও, এখানে থাকবে কায়াকিং, ঘুড়ি উৎসব, বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সুব্যবস্থা ও শিশুদের জন্য কিডস জোন। ফুল উৎসবে উপলক্ষে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, যুব-বৃদ্ধ সকল বয়সী ও শ্রেণির পেশার মানুষের চিত্ত বিনোদনের উদ্দেশ্যে সাজানো হয়েছে পুরো এলাকা।
জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, প্রথম পর্যায়ে এখানে ৩০ হাজারের বেশি ফুল গাছের চারা রোপণে করা হবে। পর্যায়ক্রমে বাড়বে ফুল গাছের পরিসর।
তারা জানান, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ফৌজদারহাটের বিশাল জায়গার পুরো এলাকা দখল করেছিল একটি চক্র। এখানে মাদকের আসরসহ অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ করে আসছিলেন স্থানীয়রা। শেষ পর্যন্ত গত জানুয়ারী মাসেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ১৯৪ একর সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে জেলা প্রশাসন। এরপরই শুরু হয় দখলমুক্ত জায়গায় দেশের সবচেয়ে বড় ফুলের বাগান গড়ে তোলার পরিকল্পনা।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘ফুল উৎসব এজন্যই করতে চাই, আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মেধা ও মননের বিকাশ ঘটাতে পারে।’ পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই জায়গার পুরোটাজুড়েই থাকবে ফুলের বাগান এবং ফুলকেন্দ্রিক নানা স্থাপনা। সেই সঙ্গে পাশে থাকা জোড়াদীঘিতেও থাকবে নৌকার মতো বিনোদনের নানা উপকরণ। সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে ফুলের এই রাজ্য।
সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার আশরাফুল আলম বলেন, ‘এই ফুল উৎসবে দেশের এবং আমাদের দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে যত ধরনের ফুল পাওয়া যায় আমরা সব রাখার চেষ্টা করছি। এখানে শত শত প্রজাতির ফুল থাকবে ফুলপ্রেমীদের জন্য। পাশাপাশি এখানে সাম্পান থাকবে। এখানকার দিঘিতে কায়কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। নৌকাবাইচ হবে। থাকবে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা।’
সূত্র: যায় যায় দিন।
৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫