দেশের ১৬ জেলায় যুবকদের মধ্যে বিনামূল্যে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। আর এসব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নিরব বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
বৃহস্পতিবার
(২ মার্চ) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ‘শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশি যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রকল্প’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। রাজধানীর কল্যাণপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৬ জেলার এ প্রশিক্ষণের সূচনা করা হয়।প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্রামে গামে এখন বাড়ি তৈরি হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা ডলার আয় করছে। যুব সমাজ যে কোন দেশের মুল্যবান সম্পদ। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। আমাদের যুব সমাজকে দক্ষ মানব সম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে।
প্রকল্পপের আওতায় প্রাথমিকভাবে দেশের ৮ বিভাগের ১৬ জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে- ঢাকা, গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, কুমিল্লা, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, রাজশাহী, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, ভোলা ও শেরপুর জেলা। তিন মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে মোট ছয় হাজার ৪০০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে পদার্পণ করেছে। দেশের জনসাধারণের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। কোডিড-১৯ এর কারণে দেশে বেকারের সংখ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া বিদেশ হতে কর্মচ্যুত হয়ে দেশে ফেরা প্রবাসীদের কারণে বেকারের সংখ্যা আরও বেড়েছে। এসব শিক্ষিত যুবদের ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হলে দেশে বেকারের সংখ্যা ও দারিদ্র্য উভয়ই হ্রাস পাবে।
প্রশিক্ষণের ৬টি বিষয় সমূহগুলো হচ্ছে- ফ্রিলেন্সিং, মাইক্রোসফট অফিস, নেটওয়ার্কিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, সফট স্কিল এবং ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণে হাতে-কলমে কাজের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক কাজ করার সুযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীরা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে সক্ষম হবে। বিনামূল্যে তিন মাসের এ প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের দিনে ২০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।
প্রাথমিক অবস্থায় দেশের ১৬ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এ জন্য প্রতিটি জেলায় প্রতি বছর ৪ ব্যাচে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রতি ব্যাচে ৪০ জন যুবক ও নারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণের মেয়াদ, ৩ মাস বা ৬০০ঘন্টা। প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাশ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর।
প্রসঙ্গত, অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মেজবাহ উদ্দিন। ই-লার্নিং এন্ড আনিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ আলম ও নগদহাট বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসরাফিল মোল্লা এছাড়া ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৮ দিন আগে শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫